আন্তর্জাতিক ডেস্ক: যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা তাদের দেশের নাগরিকদের সতর্ক করে দিয়ে বলেছেন, ‘ইসলাম ও সন্ত্রাসকে এক করে দেখবেন না। ইসলামিক স্টেট (আইএস) ও অন্যান্য জঙ্গিগোষ্ঠী এই যুদ্ধকে ইসলাম বনাম পশ্চিমাদের যুদ্ধ হিসেবে দেখাতে চাইছে।’ শনিবার রেডিওতে দেওয়া জাতির উদ্দেশে ভাষণে মুসলমানদেরকে দোষারোপ না করার আহ্বান জানান তিনি।
গত সপ্তাহে ক্যালোফোর্নিয়ার স্যান বার্নারডিনোতে একটি প্রতিবন্ধী সেবাকেন্দ্রে মুসলিম দম্পতির বন্দুক হামলায় ১৪ নিহত হওয়ার পর চলমান পরিস্থিতিতে জাতির উদ্দেশে দেওয়া ওবামার এটি তৃতীয় ভাষণ।
গত মাসে প্যারিস হামলায় ১৩০ জন নিহত এবং স্যান বার্নারডিনোতে হামলার পর যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে মুসলিমবিরোধী মনোভাব বেড়ে গেছে। এ পরিস্থিতিতে আবার আগুনে ঘি ঢেলে দিয়েছেন রিপাবলিকান পার্টি থেকে প্রেসিডেন্ট মনোনয়ন প্রত্যাশী ডোনাল্ড ট্রাম্প। তিনি সন্ত্রাসবিরোধী এই যুদ্ধ শেষ না হওয়া পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রে মুসলমানদের প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা চেয়েছেন। একই সঙ্গে মসজিদগুলোকে নজরদারির আওতায় আনার আহ্বান জানিয়েছেন।
তার এই বক্তব্যে নিজ দেশসহ বহির্বিশ্বে সমালোচনার ঝড় ওঠে। কিন্তু ট্রাম্প তার বক্তব্য প্রত্যাহার বা এর জন্য দুঃখ প্রকাশ করেননি। ওবামা বলেন, সন্ত্রাসীগোষ্ঠী আইএস চেষ্টা করছে যুক্তরাষ্ট্রকে বিভক্ত করতে। নাগরিকদের মধ্যে ভীতি সৃষ্টি করে তাদের জন্য কর্মী সংগ্রহ করার কৌশল নিয়েছে তারা। আমরা যেন তাদের ফাঁদে পা না দেই।
তিনি বলেন, ‘বিশ্বের অধিকাংশ মুসলমান ইসলামের এই বিকৃত ব্যাখ্যাকে প্রত্যাখ্যান করেছে। তারা ইসলামের নামে সন্ত্রাসীকা-সহ সব ধরনের পশ্চাৎপদ চিন্তা প্রত্যাহার করেছে। আমি আবারও বলছি পুরনো ধ্যান-ধারণা এবং বৈষম্য আখেরে আইএসকেই সাহায্য করবে এবং আমাদের জাতির নিরাপত্তা করবে বিঘ্নিত।
ডেমোক্রেটিক থেকে রিপাবলিক, উদার থেকে রক্ষণশীল সবার প্রতি তার দাবি- এই ধর্মান্ধতার বিরুদ্ধে সবাইকে রুখে দাঁড়াতে হবে। বক্সিং চ্যাম্পিয়ন মোহাম্মদ আলীর উদাহরণ টেনে তিনি বলেন, আমাদের এই ক্রীড়াবীরও ধর্মান্ধতার বিরুদ্ধে তার ঘৃণা প্রকাশ করেছেন।’
মুসলমানরা যুক্তরাষ্ট্রের একই পরিবারের সদস্য উল্লেখ করে ওবামা বলেন, ‘সব আমেরিকান বেরিয়ে এসে তাদের মুসলিম বন্ধু, প্রতিবেশী ও সহকর্মীদের জানিয়ে দিক, আমরা একে অন্যের জন্য এখানে রয়েছি।’
তথ্যসূত্র: ডন ও টাইমস অব ইন্ডিয়া অনলাইন।