Wednesday, November 9, 2016

যে কারণে হারলেন হিলারি


অবশেষে অবসান ঘটলো সব জল্পনা-কল্পনার। বহু তর্ক-বিতর্ক ডিঙিয়ে, বিরূপ মন্তব্য ও সমালোচনার দুর্গম পথ পাড়ি দিয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জয়ী হলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। আর একরাশ হতাশা নিয়ে পরাজিত হিলারি ক্লিনটন। অর্থাৎ বিশ্বের সবচে’ ক্ষমতাধর রাষ্ট্রের পরবর্তী প্রেসিডেন্ট হচ্ছেন ট্রাম্প।

এদিকে নির্বাচনের আগে নানা জরিপ, বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তের বাঘা বিশেষজ্ঞদের চুলচেরা বিশ্লেষণে এগিয়ে ছিলেন হিলারি। সবশেষ নির্বাচনের দিন শেষ অর্ধেও জনপ্রিয় বিশ্বখ্যাত সংবাদ সংস্থা রয়টার্সের জরিপে বলা হয়, নির্বাচনে হিলারির জয়ের সম্ভাবনা ৯০ শতাংশ। জ্যোতিষীদের ভবিষদ্বাণীতেও এগিয়ে ছিলেন তিনি। তবে সব হিসাব-নিকাশ পাল্টে দিয়ে অবেশেষে তাকে হারিয়ে দিলেন ট্রাম্প। আর বুকে চাপা কষ্ট নিয়ে সদ্য নির্বাচিত বিতর্কের নায়ককে অভিনন্দন জানালেন হিলারি।

কিন্তু কেন এ ভরাডুবি হিলারির? উত্তর খুঁজতে চেষ্টা করেছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ান। এ নিয়ে প্রতিবেদনও প্রকাশ করেছে । সেই প্রতিবেদনের কী পয়েন্ট ও বাংলাদেশি-আমেরিকান ব্যবসায়ী আবুল কালাম আজাদ এর ভাষ্য তুলে ধরা হলো-

অর্থনীতি : অর্থনীতি নিয়ে নিজেদের অবস্থান পরিস্কার করতে না পারায় ফের ভরাডুবি ঘটলো ডেমোক্র্যাটদের। ২০০৮ সালে বারাক ওবামা ক্ষমতাগ্রহণের পর অর্থনৈতিক মন্দায় ডুবতে থাকা যুক্তরাষ্ট্রকে টেনে তোলেন। ক্ষমতার শেষদিকে দেশটির অর্থনীতি একরকম স্থিতিশীল। এরইমধ্যে হয়েছে ব্যাপক কর্মসংস্থান। নির্বাচনী প্রচারণায় তা অব্যাহত রাখার কথা তুলে ধরেন হিলারি। তবে তা ভুলভাবে ব্যাখ্যা করেন রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প। তিনি বলেন, হিলারি নির্বাচিত হলে আমেরিকার অর্থনৈতিক অবস্থা ভালো থাকবে না, বাণিজ্য ঘাটতি দেখা দেবে। কর্মীদের বেতন কাঠামোর মধ্যে হেরফের ঘটবে। বাড়বে আয় বৈষম্য।

ইতিবাচক ভাবমূর্তি তুলে ধরতে ব্যর্থ: নির্বাচনে হিলারি ক্লিনটনই যে একমাত্র যোগ্য প্রার্থী-সে সম্পর্কে জনগণের কাছে ইতিবাচক কোনো ইমেজ তুলে ধরতে পারেননি তিনি। যদিও চেষ্টা করেছিলেন। অন্যদিকে, হিলারি সম্পর্কে নানা সময়ে বাজে মন্তব্য করে জনসমর্থন আদায় করার চেষ্টা করেছেন ট্রাম্প। শেষমেষ তা কাজেও লেগেছে।

সর্বোপরি হিলারি ক্লিনটন একজন নারী। এ বিষয়টিও ভোটে প্রভাব ফেলেছে। 

বিশ্বাস: পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালনকালে সরকারি কাজে (রাষ্ট্রের দাপ্তরিক) ব্যক্তিগত ই-মেইল ব্যবহার করেন হিলারি ক্লিনটন। অনেক আগেই এ কেলেঙ্কারি গোচরীভূত হয়। তবে তাতে দোষের কিছু পাওয়া যায়নি। নির্বাচনের চূড়ান্ত দিনের ঠিক আগ মুহূর্তে এ নিয়ে ফের ঘাঁটাঘাঁটি শুরু করে মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা (এফবিআই)। যদিও শেষমেষ জানায়, এসব মেইলে দোষের কিছুই পাওয়া যায়নি। তবে হিলারির ভরাডুবিতে এ ইস্যু তাৎপর্যপূর্ণ অবদান রেখেছে।

একই সুরে কথা বললেন বাংলাদেশি-আমেরিকান ব্যবসায়ী আবুল কালাম আজাদ। তিনি বলেন, নির্বাচনে হিলারির যে জোয়ার ছিল এ ইস্যু তাতে নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে। অনেকেই এ ঘটনার কারণে তার ওপর আস্থা রাখতে পারেননি।

বার্নি স্যান্ডার্সকে পরাজিত করে হিলারির নমিনেশন পাওয়া সম্পর্কে তিনি বলেন, বার্নিকে হারিয়ে তিনি যখন প্রেসিডেন্ট নমিনেশন পান, তখনই একটি বিশাল তরুণ গোষ্ঠী তার বিপক্ষে চলে যায়। হিলারির পরাজয়ের এটিও অন্যতম কারণ। অনেক ভোটারই ভোট দিতে যাননি। তাদের কথা বার্নিকে যখন নমিনেশন দেয়া হয়নি, তখন ভোটই দেব না। 

তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রে যে জাতিবিদ্বেষী শেতাঙ্গ সম্প্রদায় রয়েছে, তাদেরকে পুরোপুরি জাগিয়ে তুলতে পেরেছেন ট্রাম্প। খেয়াল করলে দেখবেন, তাদের অধিকাংশ ভোটই পেয়েছেন তিনি। কারণ, তারা মনেপ্রাণে হিলারিকে চান নি। বিশেষ করে বয়স্ক ভোটাররা। 

মূলপাতা

সমগ্র বাংলাদেশ

এক্সক্লুসিভ